মোঃ আজগার আলী, বিশেষ প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:
বিশ্বের কয়েকটি দেশে ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মানকি পক্স সংক্রমণ ভাইরাস। এ ভাইরাসের প্রাদুভাবে আতঙ্কিত রয়েছে সংক্রমিত দেশগুলো। বিদেশ ভ্রমণকারী পর্যটক ও আমদানিকৃত প্রাণীর সংস্পর্শে বয়ে আনা এ ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আগাম সর্তকতা অবলম্বনে ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বসানো হয়েছে স্ক্রিনিং মেডিকেল টিম। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উদ্যোগে গত ২০ আগস্ট থেকে মেডিকেল টিম সংক্রমণ ভাইরাস প্রতিরোধে স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু করেছে। ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রী ভিন্ন দেশ ভ্রমণকারী পর্যটক ও আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক চালক ও হেলপারদের নিয়ে আসা হচ্ছে মেডিকেল কেন্দ্র। এখানে স্ক্যানের মাধ্যমে মাপা হচ্ছে তাদের শারীরিক তাপমাত্রা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস শহীদ। বিদেশ ভ্রমণকারী পাসপোর্ট যাত্রীদেরকে এমপক্স ভাইরাসের সাধারণ উপসর্গগুলো সম্পর্কে দেওয়া হচ্ছে সতর্কতামূলক নির্দেশনা। এমপক্স রোগের সাধারণ উপসর্গগুলো তুলে ধরা হচ্ছে বিদেশ ভ্রমণকারী ও পর্যটকদের কাছে। এমপক্সের সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে, ৩৮ সেন্টিগ্রেডের বেশি তাপমাত্রা থাকা প্রচন্ড মাথা ব্যথা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লসিক গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ব্যথা মাংসপেশিতে ব্যথা অবসাদগ্রস্থতা ফুসকুড়ি-যা মুখ থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে হাতের তালু পায়ের তালু সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক আফিয়া দিলরুবা শিরিন বলেন, ১৯৫৮ সালে ডেনমারকে বানরের দেহে সর্বপ্রথম এ রোগ সনাক্ত হয় বলে একে মাংকিপক্স বলা হয়ে থাকে। ২০২২ সালের নভেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগের নামকরণের জন্য আধুনিক নির্দেশিকা অনুসরণ করে রোগটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে এমপক্স। তিনি আরো জানান, এ রোগটির প্রাদুর্ভাব প্রধানত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় দেখা যায়। ইতোপূর্বে অন্যান্য দেশেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমিত দেশগুলোতে ভ্রমণকারী এবং সে দেশ হতে আমদানিকৃত প্রাণীর সংস্পর্শে ভাইরাস বয়ে আনার প্রমাণ আছে। সরকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক শাহানারা খাতুন জানান, ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে মেডিকেল কেন্দ্র থেকে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে পরিসেবা। ভারত ভ্রমন শেষে বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী নাগরিকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে নবজাতক শিশু গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সম্পন্ন ব্যক্তি যেমন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কিডনি রোগী, ক্যান্সার রোগী ও এইডস রোগীদেরা রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। তিনি আরও জানান, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ, প্রভৃতি পোষক প্রাণের মাধ্যমে এমপক্স রোগ ছড়ায়। তবে সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী গরু ছাগল ভেড়া হাঁস মুরগি মহিষ ও বিড়াল থেকে এখনো পর্যন্ত এ রোগ ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস শহীদ জানান, এ রোগ বাচ্চাদের হতে পারে। তবে বয়স্কদের তুলনায় বাচ্চাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।