1. admin@dailypurbodigantonews24.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি গঠন সিলেটে এই প্রথম দুই দিনব্যাপী হাছন উৎসব হাছন রত্নে ভূষিত হলেন ৭ বিশিষ্ট গুণীজন। নড়াইলে ৫ দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন। কোটচাঁদপুরে সরিষা চাষে স্বল্প খরচে বেশি লাভ, খুশি কৃষকেরা যশোরের মনিরামপুরে নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্য পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ উপ-প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদান অভয়নগরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খান এ কামাল গ্রেফতার ঝিকরগাছায় অসহায়-দুঃস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্র নদে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতি, অর্থ-মালামাল লুট যশোরে আওয়ামী লীগের ১৬৭ নেতাকর্মীর আদালতে আত্মসমর্পণ। যশোরের অভয়নগর নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্য পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরন কর্মশালা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়

সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক ভেঙে-চুরে চুরমার দুইযুগ আগে সংস্কার করা এই সড়কটি

মোঃ আজগার আলী, বিশেষ প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫ বার পঠিত

মোঃ আজগার আলী, বিশেষ প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:

আস্ত নেই সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক। ভেঙে-চুরে চুরমার হয়ে গেছে দুইযুগ আগে সংস্কার করা এ সড়কটি। গর্তে গর্তে ভরে গেছে সড়কটির সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ থেকে দেবহাটা উপজেলার সখিপুর মোড় পর্যন্ত। খানাখন্দে ভরা সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটি সংস্কারে আপাতত কোন অভিভাবক দেখা যাচ্ছে না। ফলে সড়কে যাতায়াতকারী মানুষের দুর্ভোগ চরমে। সড়কটির উপরের ছাল-চামড়া উঠে গেছে। বেহাল সড়কে নাকাল সাতক্ষীরাবাসি।

এ সড়ক ধরেই সাতক্ষীরাসহ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলার একাংশের মানুষ। এ সড়ক ধরেই সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। এ সড়ক দিয়ে রাজধানী ঢাকার সাথে পণ্য আনা-নেওয়া করেন ব্যবসায়ীরা। অথচ সড়কটি অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে আছে মাসের পর মাস।

দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া এলাকার বাসিন্দা অহিদুজ্জামান এভাবেই সড়কটির দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে বলেন, বর্তমানে সড়কটিতে চলতে গেলে প্রাণটা হাতের মুঠোয় নিয়ে দোয়া-দুরুদ পড়তে হয়। বাস চলে হেলে-দুলে। ইজিবাইক, গ্রামবাংলা, মাহিন্দ্রা থ্রি হুইলারে উঠলে দোলনার মতো দোল খায়। কখনো কখনো পাল্টি খেয়ে উল্টে পড়ে সড়কের উপর।

তিনি আরও জানান, সড়কটির আলিপুর চেকপোস্ট, আলিপুর হাটখোলা ও বহেরা থেকে টানা সখিপুর মোড় পর্যন্ত এলাকা জুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতে গর্তগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রতিনিয়ত ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে এই রোডে যাতায়াতকারী রোগীদের ক্ষেত্রে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল অবদি পৌছানোর আগেই ঝাঁকুনিতে রুগির অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়। সড়কটির এ বেহাল দশার জন্য সড়ক বিভাগের গাফিলতিকেই দুষছেন ভুক্তভোগীরা।

স্কুল শিক্ষক আব্দুর রহিম, শামীম হোসেন, আব্দুল লতিফ, ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামসহ অনেকেই সড়ক সংস্কারে অনিয়ম-দুর্নীতির ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, সড়কের এই অবস্থার জন্য সড়ক বিভাগের গাফিলাতি সবচেয়ে বেশি দায়ী। তারা কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে রাস্তা সংস্কার করে দায় সারে। সংস্কার করার সময় ধুলাবালির উপরে পাথর কুচি দিয়ে তার উপরে সামান্য পিচ ঢেলে দেয়। কখনো কখনো পোড়া মবিলও দিতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক দেখলে মনে হয় রাস্তা ঠিক হয়েছে। কিন্তু আসলে তা হয় না।

তারা আরও জানান, এছাড়া ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু কিছু স্থানে আস্ত ইট ভেঙে গর্ত পূরণ করা হচ্ছে। যা পরবর্তী এক ঘন্টার মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। সড়কের গর্তে পানি জমে যেন ডোবায় পরিণত হয়। কোথাও কোথাও আবার পিচের উপর ইটের সোলিং করতে দেখা যায়।

আরিফা সুলতানা নামের একজন সরকারি চাকরিজীবী বলেন, সাতক্ষীরা থেকে বুড়িগোয়ালিনীর দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা থেকে ভেটখালী সড়কের দৈর্ঘ্য ৬২ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা শহর থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে কালিগঞ্জ। সাতক্ষীরা থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৩৫০ কিলোমিটার এবং সাতক্ষীরা থেকে খুলনার দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। এখন সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় যেতে যত সময় লাগে সাতক্ষীরা থেকে বুড়িগোয়ালিনী যেতে ঠিক তত সময় লাগে। আবার সাতক্ষীরা থেকে খুলনা যেতে যত সময় লাগে সাতক্ষীরা থেকে কালিগঞ্জ যেতে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে। এর কারণ হলো সড়কের বেহাল দশা। এই সড়কটি উন্নত হলে বদলে যেতে পারে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা। কেননা একমাত্র সাতক্ষীরা জেলায় রয়েছে দুটি বাণিজ্যিক বন্দর। একটি ভোমরা অন্যটি বসন্তপুর। আবার সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে এখানে। এছাড়া সাতক্ষীরার মধু, মোম, আম ও চিংড়ির খ্যাতি জগৎজুড়ে।

সাতক্ষীরা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা থেকে ভেটখালী চার লেনের সড়ক করার জন্য ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়ে তারা একটি প্রকল্প তৈরি করে ২০২২ সালের ২ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের কারিগরি কমিটি ওই বছর ১১ এপ্রিল পরিদর্শনে এসে নকশা পরিবর্তন করে সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ৩৪ ফুট প্রস্থ ও কালীগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত সড়ক ২৪ ফুট প্রস্থ রেখে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলেন। ২০২৩ সালের ২৩ মে কারিগরি কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী ৭৪১ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি আবার পরিবর্তন করে সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার চার লেন ও কালীগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ২৪ ফুট প্রস্থ রেখে প্রকল্প তৈরি করার জন্য বলা হয়। সেই অনুযায়ী, ২০২৩ সালের পহেলা আগস্ট সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস ৮২২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়ে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। বর্তমানে সড়কটি সংস্কারে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। তবে টেন্ডারটি এখনো পাশ হয়নি।

সূত্রমতে, সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জ সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার করা হয় ১৯৯৮ সালে। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় মেরামত না করায় চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচল উপযোগী রাখতে যেসব স্থানে পানি জমে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছিল, ওই স্থানে হেরিংবন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি ছোট ছোট নষ্ট স্থানে সওজ নিজ উদ্যোগে মেরামত করে সড়ক চালু রাখার ব্যবস্থা করেছে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর