নিজেস্ব প্রতিবেদক:
*২০ লক্ষ টাকায় যৌন হয়রানি করে আত্মহত্যায় বাধ্য করা ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেন আজাদ।
*জড়িত ছিলো স্কুল কমিটি,প্রধান শিক্ষকসহ রাঘব বোয়ালরা।
*প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি চেষ্টার অভিযোগ আজাদের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালে ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার ভাঙা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী স্কুলছাত্রী হিরামনি মৃত্যুতে দায়ী লম্পট শিক্ষক আজাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও এর পেছনের কারণ নিয়ে “ভাঙ্গায় লম্পট শিক্ষক আজাদের ফাঁসি চায় শিক্ষার্থীরা” শিরোনামে একটি চাঞ্চল্যকর অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে অগ্রযাত্রা। অগ্রযাত্রায় প্রকাশিত ১ম পর্বের সেই ভিডিও প্রতিবেদনটি ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে ভাঙা উপজেলায়। এরই জের ধরে অগ্রযাত্রা’র সংবাদকর্মী ও শিক্ষার্থীদের নানান রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকে লম্পট শিক্ষক আজাদ। ওদিকে এরই মধ্যে চলমান অগ্রযাত্রা’র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে স্কুলছাত্রী হিরামনি মৃত্যুতে আজাদের জড়িত থাকার আরো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
এবারের অনুসন্ধানে অগ্রযাত্রা কথা বলে ২০১৭ সালে ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজাদের যৌন হয়রানির শিকার হয়ে সেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নেয়া একই স্কুলের ১০ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী হিরামনি তিশার বাবা মনির হোসেনের সাথে৷ তার সাথে কথা বলে ও সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে- চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী হিরামনি তিশার মৃত্যুতে দায়ী যৌন হয়রানিকারী লম্পট আজাদ, স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজনের সহযোগিতায় স্কুলছাত্রী হিরামনি তিশার মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে। মূলত, হিরামনি তিশার গৃহশিক্ষক ছিলেন দুশ্চরিত্র আজাদ, আর পড়াতে গিয়ে নানানভাবে প্রায়শই যৌন হয়রানি করতেন হিরামনি তিশাকে। পিতৃতূল্য শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরণের বিকৃত যৌনাচারের শিকার হয়ে হিরামনি তিশা লজ্জায় ঘৃণায় সেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তখন ভুক্তভোগী হিরামনির মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন লম্পট শিক্ষক আজাদের বিরুদ্ধে। কিন্ত মামলা দায়ের পর থেকে তৎকালীন স্থানীয় চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা, ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কতিপয় অসাধু সদস্য, ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে হিরামনি তিশার মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। এমনকি সেসময় লম্পট আজাদের লালসার শিকার হয়ে প্রাণ দেয়া মেধাবী শিক্ষার্থী হিরামনি তিশার সহকর্মীরা বেশ কয়েকদিন আন্দোলন করলেও তাদেরকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দেন লম্পট আজাদ ও তার লোকজন, এমনকি তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়ার হুমকিও দেয় ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কতিপয় সদস্য ও শিক্ষকরা।
ওদিকে হিরামনি তিশাকে যৌন হয়রানি করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার ঘটনা জানাজানি হলে লম্পট আজাদের তৎকালীন স্ত্রীও ঘৃণায় তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যান। অথচ একজন সম্ভাবনাময় মেধাবী ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া লম্পট শিক্ষক আজাদ ২০ লক্ষ টাকায় এতোবড় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ধামা চাপা দিয়ে পুনরায় ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন অদ্যবধি। কিন্ত লম্পট আজাদকে স্কুল কমিটি ও কতিপয় শিক্ষকের নগ্ন সমর্থন ও আজাদের ব্যাপক প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে কোন প্রতিবাদ জানাতে পারেনি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয়, একজন সাধারণ শিক্ষক পদে চাকরি করা আজাদ ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে হিরামনি তিশার মৃত্যু রহস্য কিভাবে ধামাচাপা দিলেন, এতো টাকা তিনি কোথায় পেলেন? তা নিয়েও রয়ে গেছে প্রশ্ন-
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা ২০১৭ সালে লম্পট শিক্ষক আজাদ কর্তৃক ধামাচাপা দেয়া হিরামনি তিশার মৃত্যুর ঘটনা ফের প্রকাশ্যে এনে আজাদের পদত্যাগ ও ফাঁসি দাবি করে। এমনকি এ নিয়ে লিখিত বিবৃতি ও কর্মসূচীও দেয়া হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তরফ থেকে। কিন্ত পুনরায় পুরোনো রুপে ফিরে আসে আজাদ, সে শিক্ষার্থীদের আবারো নানাবিধ হুমকি দিতে থাকে, এমনকি তার হুমকি থেকে বাদ যায়নি গণমাধ্যমও। অগ্রযাত্রা তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় কিছু অসাধু সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতা দিয়ে অগ্রযাত্রার সংবাদকর্মীদের হুমকি দিয়ে গণমাধ্যমের কন্ঠ রোধের চেষ্টাও করেন লম্পট আজাদ। লম্পট শিক্ষক আজাদকে শিক্ষার্থীরা ডাকছেন খুনি আজাদ বলে। এমন একজন লম্পট যৌনহয়রানিকারী ও ছাত্রীর মৃত্যুতে দায়ী চরম বিতর্কিত শিক্ষককে দিয়ে কেনো ও কিভাবে স্বনামধন্য ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ছাত্রীদের ক্লাস নেয়ান তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে তুমুল সমালোচনা।
২০১৭ সালে লম্পট আজাদ কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়ে সেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নেয়া হিরামনির পরিবারের পক্ষ থেকে হওয়া মামলা ধামাচাপা দেয়ার ঘটনায় লম্পট আজাদকে সহযোগিতা করা ভাঙা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষক এবং স্থানীয় কথিত গণমান্যদের মধ্যে কে কে কিভাবে এবং কোন স্বার্থে জড়িত তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকবে লম্পট আজাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ২য় পর্বে-
চোখ রাখুন অগ্রযাত্রায়-